আইয়ামে বীজের রোজা নভেম্বর ২০২৪
প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোনেরা আসসালামু আলাইকুম। আজকে আমরা আইয়ামে বীজের রোজা কবে ২০২৪, এর বিধান, মাসয়ালা, এর ফজিলত সমস্ত বিষয় নিয়ে বিস্তারিত জানবো।
রামাদানের রোজা ছাড়াও সারা বছর অনেকগুলো নফল রোজা রয়েছে। আর এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য নফল রোজা হচ্ছে আইয়ামে বীজের রোজা। প্রতিমাসে তিন দিন রোজা রাখার মাধ্যমে অর্থাৎ আইয়ামে বীজের রোজা রাখলে তাতে পুরো মাস রোজা রাখার সওয়াব পাওয়া যাবে।
হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম সারা বছর এই রোজা রাখতেন। আর এই থেকেই আইয়ামে বীজের ফজিলত সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। আর আজকের এই পোস্টে আমরা আইয়ামে বীজের রোজা কবে থেকে শুরু? কোন মাসে? এর ফজিলত, এর বিধান ও বিভিন্ন মাসয়ালা সম্পর্কে।
আইয়ামে বীজের রোজা কাকে বলে?
আপনি কি জানেন আইয়ামে বীজের রোজা কাকে বলে? যদি জেনে না থাকেন তাহলে জেনে নিন। আইয়ামে বিজ আরবি দু’টি শব্দের সমন্বয়ে গঠিত। যেমন-
(১) ‘আইয়াম’ আরবি শব্দ, এর অর্থ হলো-দিবসসমূহ, কাল, সময় ইত্যাদি। এটি বহুবচন, এর একবচন হলো ‘ইয়াওম’, অর্থ হলো দিন বা দিবস।
(২) ‘বিজ’ বা ‘বিদ’ অর্থ শ্বেতবরণ, শুভ্রবর্ণ, ঔজ্জ্বল্য, সফেদ, সাদা রং ইত্যাদি। আর প্রতি হিজরী মাসের চন্দ্র মাসে ১৩-১৪,১৫ তারিখে আইয়ামে বিজ বলা হয়।
আমরা অনেকেই ইন্টারনেটের মাধ্যমে খোঁজাখুঁজি করি যে, নভেম্বর মাসে কত তারিখে আইয়ামে বীজের রোজা রাখতে হবে সে বিষয়ে সম্পর্কে। খোঁজাখুঁজির পর যদি আপনি নির্দিষ্ট কোন তথ্য পেয়ে না থাকেন। তাহলে চিন্তার কোন কারণ নেই। আমরা আপনাদের জানিয়ে দেবো কত তারিখ থেকে আইয়াম বীজের রোজা দিতে হবে?
আরোও জানুনঃ
- আইয়ামে বীজের রোজা নভেম্বর ২০২৪
- জুলাই মাসের সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি ২০২৪ [নফল রোজা]
- আইয়ামে বীজের রোজা অক্টোবর ২০২৪
- আইয়ামে বীজের রোজা জুলাই ২০২৪
- আইয়ামে বীজের রোজা সেপ্টেম্বর ২০২৪
আইয়ামে বীজের রোজা নভেম্বর ২০২৪
আমরা এই পর্যায়ে জানবো আইয়ামে বীজের রোজা নভেম্বর ২০২৪ মাসের কত তারিখ থেকে অনুষ্ঠিত হবে। ইংরাজি মাসের ২০২৪ সালের তথা হিজরীর ১৪৪৫ এর জেল পথ মাস শুরু হয়েছে দশ মে ২০২৪ শুক্রবার থেকে। আর সে হিসাবে এই মাসের আইয়ামে বীজের তিনটি রোজা রাখতে হবে যথাক্রমে প্রতি চন্দ্র মাসের ১৩-১৪ ও ১৫ তারিখ।
আর বাংলাদেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিমাসের চাঁদ দেখার উপর ঘোষণা প্রদান করে। আমরা বিভিন্ন তথ্য দিয়ে আপনাদের সাহায্য করার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ। আপনারা চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটের একজন নিয়মিত ভিজিটর হতে পারেন। আর ইসলামের বিভিন্ন দিক নির্দেশনা সম্পর্কে জানতে চাইলে সবার আগে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন ধন্যবাদ
আইয়ামে বীজ বা নফল রোজা সম্পর্কে বিভিন্ন মাসয়ালা
আমরা এই পর্যায়ে জানবো আইয়ামে বীজ বা নফল রোজা সম্পর্কে বিভিন্ন মাসয়ালা সম্পর্কে।
এই রোজাকে সওমে আদম বা আদম (আ.) এর রোজা বলা হয়। হজরত আদম (আ.) ও মা হাওয়া (আ.) দুনিয়ায় আসার পর প্রথম এই তিনটি রোজা পালন করেন; যার বদৌলতে তারা আগের মতো জান্নাতি রূপ–লাবণ্য ও ঔজ্জ্বল্য ফিরে পান এবং এই দিনগুলোতে চাঁদ পূর্ণ শশীতে পরিণত হয়, রাতভর পূর্ণিমার জ্যোত্স্নালোক বিকিরণ করে বলে এই নামকরণ করা হয়েছে।
আইয়ামে বিজের রোজা সম্পর্কে হাদিস:
> আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমার প্রিয়তম বন্ধু আমাকে তিনটি ব্যাপারে বিশেষভাবে অসিয়ত করেছেন: ১. প্রতি মাসে তিন দিন রোজা রাখা, ২. দুই রাকাত সালাতুত্ দুহা আদায় করা এবং ৩. রাতে ঘুমানোর আগেই যেন বিতর নামাজ আদায় করি (বুখারি)।
> আইয়ামে বিজে রোজা রাখা সুন্নত। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘প্রতি মাসে তিন দিন রোজা রাখো।’ (বুখারি ও মুসলিম)।
> আবদুল মালেক বিন কুদামাহ বিন মালহান (রা.) বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাদেরকে আইয়ামে বীজ তথা চন্দ্রমাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে রোজা রাখার নির্দেশ দিতেন’ (আবু দাউদ)।
> ইবনু আব্বাস (রা.) বলেন , ‘রাসূলুল্লাহ (সা.) সফর ও মুকিম অবস্থায় কখনো আইয়ামে বিজের রোজা ভঙ্গ করতেন না’ (নাসায়ী)।
> রাসূল (সা.) বলেন, ‘কোনো মাসে তিনটি রোজা রাখলে ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ রাখবে’ (আহমদ)।
এসব হাদিস থেকে প্রমাণ হয়, রাসূল (সা.) তাঁর প্রিয় সাথীদের আইয়ামে বিজের রোজা রাখার জন্য বিশেষভাবে নির্দেশ দিতেন; কিন্তু এই নির্দেশ আবশ্যকতার ভঙ্গিতে ছিল না বরং তা ছিল নফল তথা অতিরিক্ত আমল হিসেবে। তিনি সাহাবিদের এই রোজা রাখতে বলতেন কিন্তু তাদের সবাই এ নির্দেশ পালন করতেন না, যা থেকে প্রমাণ হয়, তাঁর এ নির্দেশ নফল হিসেবে ছিল ওয়াজিব হিসেবে নয়।
উল্লেখ্য, রমজান মাসে যেহেতু পূর্ণ এক মাস রোজা ফরজ; তাই রমজানে আইয়ামে বিজের রোজা নেই। মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা সব মুমিন মুসলমানকে আইয়ামে বিজের রোজাগুলো রাখার তাওফিক দান করুন। আমিন।