আইয়ামে বীজের রোজা সম্পর্কে হাদিস, নিয়ত এবং ফজীলত

আসসালামু আলাইকুম মুসলিমগন। কেমন আছেন আপনারা? আশা করছি মহান আল্লাহর রহমতে আপনারা সবাই ভাল আছেন। আজকে আমি আলোচনা করবো আইয়ামে বীজের রোজা সম্পর্কে হাদিস, নিয়ত এবং ফজীলত সম্পর্কে। আপনাদের অনেকের মধ্যেই সঠিক হাদিস নিয়ে ধারণা নেই। অনেকেই আছেন যাদের বিষয় সম্পর্কে ধারণা নেই। সকল মুলমানদের উচিত ইসলামিক বিষয় সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকা। তেমনি একটি বিষয় হলো আইয়ামে বীজের রোজা সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকা। আইয়ামে বীজের রোজা রাখার অনেক গুরুত্ব ও ফজীলত রয়েছে। এই রোজা পালনে মুসলমানরা অনেক সওয়াব লাভ করতে পারে। কারণ বছরজুড়ে সহজে রোজার সওয়াব পাওয়ার অন্যতম মাধ্যম এ রোজা। এ ছাড়াও বছর জুড়ে রোজার সওয়াব পাওয়ার আরও আমল আছে। তবে তুলনামূলক ভাবে সহজে ও সারা বছর রোজার সওয়াব মেলে এ রোজায়। হাদিসের বর্ণনা থেকে তা প্রমাণিত। কিন্তু তা কীভাবে? তাহলে চলেন বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক।
নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘হে আব্দুল্লাহ! তোমার জন্য যথেষ্ট যে, তুমি প্রত্যেক মাসে তিন দিন রোজা রাখবে। কেননা নেক আমলের বদলে তোমার জন্য রয়েছে দশগুণ নেকি। এভাবে সারা বছরের রোজা হয়ে যায়।’

প্রতি চন্দ্র মাসে তিনটি রোজা রাখা মুস্তাহাব। দিনগুলো হলো আইয়ামুল বিজ তথা প্রতি আরবি মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫তম দিন। নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কখনো এ রোজাগুলো ছাড়তেন না। তিনি সব সময় আইয়ামে বিজের রোজা রাখতেন। এমনকি সফরেও। তবে রোজাগুলো ফজিলতপূর্ণ হলেও তিনি উম্মতের জন্য এ রোজাকে বাধ্যতামূলক করেননি। হাদিসে পাকে এসেছে-

‘তুমি যদি (প্রতি) মাসে তিনটি রোজা রাখতে চাও, তাহলে এই তেরো, চৌদ্দ এবং পনেরোতম দিনে রোজা রাখবে।’ (তিরমিজি, নাসাঈ, ইবনে হিব্বান, মুসনাদে আহমাদ)।আইয়ামে বিজে রোজা রাখার বিষয়ে নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহাবাদের উদ্বুদ্ধ করেছেন। এবং বলেছেন, ‘আইয়ামে বিজের রোজা রাখা সারা বছরই রোজা রাখার সমতুল্য।’ হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস বর্ণনা করেছেন নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বলেছেন, ‘তুমি প্রতি মাসে তিন দিন রোজা রাখবে-এটা তোমার জন্য ভালো। কেননা তোমার একটি সৎকাজ দশগুণ সমান; ফলে তুমি যেন পুরো বছরই রোজা রাখছো।’ (বুখারি)
আইয়ামে বিজের রোজা সম্পর্কে আরও বর্ণিত হয়েছে যে-

হজরত আদম ও হাওয়া আলাইহিস সালাম বেহেশতের নিষিদ্ধ ফল খাওয়ার পর তাদের শরীর থেকে জান্নাতি পোশাক চলে যায়। আর তাদের শরীরের রংও কুৎসিত হয়ে যায়। এরপর হজরত আদম ও হাওয়া আলাইহিস সালাম আল্লাহর হুকুমে চন্দ্র মাসের ১৩, ১৪ এবং ১৫ তারিখে রোজা রাখলে আবার তাদের শরীরের রং পূর্বের ন্যায় উজ্জ্বল হয়ে যায়। তাই এই তিন দিনকে আইয়্যামে বিজ বা উজ্জ্বলতার দিন বলা হয়।সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, আইয়ামে বিজের রোজা পালন করা। হাদিসের ওপর যথাযথ আমল করা। নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিয়মিত আমলটি পালন করে বছরজুড়ে রোজার সওয়াব পাওয়া চেষ্টা করা।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে প্রত্যেক আরবি মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ তিনদিন আইয়ামে বিজের রোজা রাখার তাওফিক দান করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *