নফল রোজার নিয়ত কখন করতে হয়

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোনেরা আপনারা সবাই কেমন আছেন আলহামদুলিল্লাহ আমরাও ভালো আছি, আল্লাহর অশেষ রহমতে আর আমরা আজকে আপনাদের প্রিয় ওয়েব সাইটে নফল রোজার নিয়ত কখন করতে হয় এবং কিভাবে করবেন তার সমস্ত ডিটেলস তথ্য আপনাদের মাঝে আজকে আমরা শেয়ার করব। তাই আপনারা আমাদের এই আর্টিকেলটি স্কিপ না দিয়ে ভালোভাবে পড়ুন আমরা প্রতিবছর বারো মাসের মধ্যে একটি মাস আল্লাহ তায়ালা আমাদের জন্য এক মাস রোজা ফরজ করে দিয়েছেন যা আমরা পালন করে থাকি। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য একমাস রোজা পালন করার পরও আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে নফল রোজা সহ অনেক সময় পালন করে থাকি বা দিয়ে থাকি তবে নফল রোজা রাখার কিছু নিয়ম রয়েছে যা আমরা অনেকেই জানি না।

নফল রোজা মানে হচ্ছে নিজের জন্য রোজা রাখা অর্থাৎ ফরজ রোজার পাশাপাশি নফল রোজা পালন করলে আল্লাহ তা‘আলার জীবনের গুনাহ মাফ করে অনেক সওয়াব দান করে, এবং ওই বান্দাকে আল্লাহতালা যে আল্লাহ তাআলার এক মাস ফরজ রোজা আদায়ের পর নফল রোজা পালন করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য সেই ব্যক্তিকে আল্লাহতালা অনেক ভালোবাসে, তবে নফল রোজা দেওয়ার অনেকগুলো নিয়ম রয়েছে। যা আপনাদেরকে জানতে হবে এবং সে অনুযায়ী আপনাকে নফল রোজা রেখে আমল করতে হবে।

নফল রোজা কি

নফল রোজা কি সেটা আপনাকে আগে জানতে হবে তাহলে আপনি বিষয়টি বুঝতে পারবেন যে আমরা কি কারনে নফল রোজা দিয়ে থাকি নফল রোজা হচ্ছে সম্পূর্ণ আপনার নিজের ইচ্ছা আপনি যদি নফল রোজা দেন তাহলে সাওয়াব পাবেন আর আপনি যদি নফল রোজা না দেন। তাহলে আপনার এতে করে কোন গুনাহ হবে না। তবে নফল রোজা আপনি যদি রাখতে চান তাহলে আপনি রাখতে পারবেন এবং সওয়াব পাবেন, এতে কোন সন্দেহ নেই।

নফল রোজা রাখার নিয়ত

আপনারা সব সময় একটি কথা মনে রাখবেন যে, নিয়ত মানে হচ্ছে সংকল্প করা তার মানে আপনি যদি কোন বিষয়ে সম্পর্কে সংকল্প করেন, তাহলে আপনার সেটা নিয়ত হয়ে যায় তবে সাধারণত নফল রোজার ক্ষেত্রে নিয়ত করার কোন শর্ত নেই। আপনি যেকোনো সময় নিয়ত করে রাতের সেহরি করে নফল রোজা রাখতে পারেন। তবে শর্ত হচ্ছে ফজর শুরু হওয়ার পর থেকে রোজা ভঙ্গকারী জীবন যেগুলো জিনিস ভক্ষণ এরকম কোন কিছু করলে রোজা ভেঙ্গে যায় তা থেকে রোজাকারীকে বিরত থাকতে হবে।

রোজা নিয়ে হাদিস

রোজা নিয়ে অনেক সহিহ হাদিস রয়েছে, যা আমরা মেনে চলি এবং সে অনুপাতে জীবন গড়ার চেষ্টা করি ঠিক তেমনি আজকে আমরা এই আর্টিকেলে রোজা নিয়ে কিছু সহিহ হাদিস আপনাদের মাঝে শেয়ার করব যা আপনারা সেভাবে আমল করতে পারেন নিচে হাদিস গুলো দেওয়া হলো —

হজরত হুজায়ফা (রা.) বর্ণনা করেন, মহানবী (সা.) আমার বুকে হেলান দিয়ে ছিলেন। তখন তিনি বললেন, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলার পর যে ব্যক্তির জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে একদিন রোজা রাখার পর যে ব্যক্তির জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় কিছু সদকা করার পর যে ব্যক্তির জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটবে, সেও জান্নাত প্রবেশ করবে।’ (মুসনাদে আহমাদ, সহিহ্ তারগিব, হাদিস: ৯৭২)

হজরত উসমান বিন আবুল আস থেকে বর্ণিত, মহানবী (সা.) এরশাদ করেন, ‘রোজা জাহান্নাম থেকে বাঁচার জন্য ঢালস্বরূপ; যেমন যুদ্ধের সময় নিজেকে রক্ষা করার জন্য তোমাদের ঢাল থাকে।’ (মুসনাদে আহমাদ, সহিহুল জামিউস সাগির, হাদিস: ৩৮৭৯)

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেন, ‘কিয়ামতের দিন রোজা ও কোরআন বান্দার জন্য সুপারিশ করবে। রোজা বলবে, ‘হে আমার প্রতিপালক, আমি তাকে পানাহার ও যৌনকর্ম থেকে বিরত রেখেছিলাম। সুতরাং তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন।’ কোরআন বলবে, ‘আমি তাকে রাতের ঘুম থেকে বিরত রেখেছিলাম। সুতরাং তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন।’ মহানবী (সা.) আরও বলেন, ‘অতএব উভয়ের সুপারিশ গৃহীত হবে।’ (মুসনাদে আহমাদ, সহিহ তারগিব, হাদিস: ৯৬৯)

হজরত আবু উমামা (রা.) বর্ণনা করেন, আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আমাকে এমন কোনো আমলের আজ্ঞা করুন; যার বিনিময়ে আল্লাহ আমাকে লাভবান করবেন।’ (অন্য এক বর্ণনায় আছে, ‘যার মাধ্যমে আমি জান্নাত যেতে পারব’) তিনি বললেন, ‘তুমি রোজা রাখো। কারণ, এর সমতুল্য কিছু নেই।’ পুনরায় আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আমাকে কোনো আমলের আদেশ করুন।’ তিনি পুনরায় একই কথা বললেন, ‘তুমি রোজা রাখো। কারণ, এর সমতুল্য কিছু নেই।’ (নাসায়ি, সহিহ্ তারগিব, হাদিস: ৯৭৩)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *